রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রায় ২৫ জন প্রান্তিক আদিবাসী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত (ব্রি-২৩) জাতের উন্নত ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে ধানের বীজ বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় কৃষক সমিতির রাজশাহী জেলা কমিটি।
এসময় সম্প্রতি সেচের পানি না পেয়ে আত্মহত্যা করা দুই কৃষকের পরিবারসহ স্থানীয় আদিবাসী কৃষকদের মাঝে এসব ধানের বীজ বিতরণ করা হয়। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, ব্রি-২৩ জাতের ধানের বীজ স্বল্পমেয়াদী ও অধিক ফলনশীল। এর জীবনকাল বিবেচনা করা হয় ৮৫-৯০ বা ১১৫-১২৫ দিন। আলোক অসংবেদনশীল এই বীজ দেশের জোয়ারভাটা, লবণাক্ততা ও বন্যা কবলিত এলাকার জন্য উপযোগী এবং আমন মৌসুমে চাষোপযোগী। পরিপক্ক অবস্থায় জাতটি ৮ ডিএস/মি মাত্রার লবণাক্ততা ও ১৫ দিন পর্যন্ত জলমগ্নতা সহ্য করতে পারে। ধানের চাল লম্বা, চিকন ও সাদা।
সর্বশেষ ৩১ ভাদ্র পর্যন্ত এটি রোপন করা যায়।বীজ বিতরণের সময় কৃষক সমিতির রাজশাহীর নেতারা বলেন, ‘জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষকদের বড় ধরনের অবদান থাকলেও নায্যতার বিবেচনায় তারা বরাবরই অবহেলিত! দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের অধিকাংশ কৃষকেরা এখনও আধুনিকভাবে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। আদিবাসী কৃষকেরা আরও বেশি অবহেলিত।
তারা বলেন, ‘কৃষকদের বর্তমান এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কিভাবে তাদের সহযোগিতা করা যায়, সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার চেষ্টা করছে জাতীয় কৃষক সমিতি। তারই অংশ হিসেবে আজকে আদিবাসী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে উন্নত জাতের ধানের বীজ বিতরণ করা হলো। আমাদের বিশ্বাস, এই জাতের ধান রোপণ করে অবশ্যই কৃষকেরা লাভবান হবেন। তারা লাভবান হলে, তাদের মুখে হাসি ফুটলে কৃষক সমিতির রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা অর্জিত হবে।
জাতীয় কৃষক সমিতির রাজশাহী জেলার সভাপতি মতিউর রহমান তপনের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল মতিন, জেলা কৃষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, কৃষক নেতা শাহীন, গোপাল সরকার, আদিবাসী নেতা মাহান্তো, কৃষক নেতা মুকুল শেখ প্রমুখ। কর্মসূচি পরিচালনা করেন জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান।