প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ যেন দ্বিতীয় ম্যাচের চিত্রনাট্য মেনেই এগোল এ ম্যাচটিও। টসে জিতে আগে ব্যাটিং করা ভারত আটকে গেল কম রানের মধ্যে, আবারও র্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বর দলকে হারানোর দুয়ার ভালোভাবেই খুলে গেল বাংলাদেশের সামনে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রান তাড়ায় পথ হারালেও এবার শামীমা সুলতানা, নিগার সুলতানা, সুলতানা খাতুন, নাহিদা আক্তাররা পথ দেখিয়েছেন বাংলাদেশকে, এনে দিয়েছেন ৪ উইকেটের স্মরণীয় জয়। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের ঐতিহাসিক ফাইনালের পর ভারতকে আবার হারাল বাংলাদেশ, যেটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে প্রতিবেশীদের বিপক্ষে তাদের প্রথম জয়। সব মিলিয়ে এটা ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের মেয়েদের তৃতীয় জয়। ভারতের দেওয়া ১০৩ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়ে গেছে ১০ বল হাতে রেখেই। অবশ্য প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল ভারত।
রান তাড়ায় বাংলাদেশ অবশ্য আজও শুরুতেই ধাক্কা খায়। ওপেনার সাথি রানি ও তিনে নামা দিলারা আক্তার ফেরেন ৪ ওভারের মধ্যে, দুজনই মিন্নু মানির শিকার। তবে সর্বশেষ ম্যাচে যা করতে পারেনি বাংলাদেশ, এবার করেছে সেটিই-টপ অর্ডারের একজন ইনিংস ধরে রাখেন, মাঝের ওভারগুলোতে একটা বড় জুটিও হয়। অধিনায়ক নিগারের সঙ্গে শামীমা সুলতানার তৃতীয় উইকেট জুটিতে ওঠে ৪৯ বলে ৪৬ রান। সে জুটি ভাঙে দেবিকা বৈদ্যর বলে। শামীমাকে ভালো সঙ্গ দিলেও তখন ফেরেন অধিনায়ক নিগার।
ভালো একটা ভিতে দাঁড়িয়ে স্বর্ণা আক্তারের কাছ থেকে দ্রুতগতির একটি ইনিংসই হয়তো আশা করছিল বাংলাদেশ, তবে সেটি পারেননি তিনি। সুইপ করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে জেমিমা রদ্রিগজকে প্রথম উইকেট উপহার দেন স্বর্ণা। স্বর্ণা না পারলেও সুলতানা খেলেন ৮ বলে ১২ রানের ক্যামিও। দেবিকার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে কাভারে ক্যাচ তুলে ফেরেন সুলতানা। সুলতানার উইকেটের ঠিক পরের বলেই বাংলাদেশকে আরও চাপে ফেলে দেয় শামীমার রানআউট। সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়ে ক্রিজের বাইরেই আটকা পড়েন ৪৬ বলে ৪২ রান করা শামীমা।
শেষ ১৮ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান, দ্বিতীয় ম্যাচের তুলনায় স্বস্তিতেই ছিল স্বাগতিকেরা। রান রেট নাগালের মধ্যে ছিল বলে সেভাবে ঝুঁকি নিতে হয়নি। অভিষিক্ত রাশি কানোজিয়ার করা ১৮তম ওভারে কাজটি আরও সহজ হয়ে আসে বাংলাদেশের। নো বল, এরপর ফ্রি হিটে মারা নাহিদার চারে ওই ওভার শেষে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২ রান। পরের ওভারের প্রথম ২ বলে ২ সিঙ্গেলে আসে জয়।
এর আগে ভারতকে শুরুতে চাপে ফেলেন সুলতানা। উইকেটের সহায়তা আদায় করেন এ অফ স্পিনার, সঙ্গে পান ভালো বোলিংয়ের পুরস্কারও। স্মৃতি মান্ধানা স্লিপে ক্যাচ দেন, শেফালি বর্মা ক্যাচ তোলেন লং অনে। ২০ রানে ২ উইকেট হারানো ভারতের ইসিংস পুনর্গঠনের কাজটি অবশ্য ভালোই করেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর ও জেমিমা রদ্রিগজ।
হারমানপ্রিত-জেমিমার ৪৫ রানের জুটি ভাঙে পার্টটাইমার স্বর্ণা আক্তারের লেগ স্পিনে, ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন ২৬ বলে ২৮ রান করা জেমিমা। ভারত অধিনায়ক থাকেন আরও কিছুক্ষণ, যস্টিকা ভাটিয়ার সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ২৬ রান। হারমানপ্রিত থামেন ফাহিমা খাতুনের বলে স্টাম্পিং হয়ে, উইকেটের পেছনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার বেশ ভালো একটা দিন কাটান।
তখনো ইনিংসে ২৩ বল বাকি, ভারতের স্কোর ৩ উইকেটে ৯১ রান। তবে মিরপুরের ধীরগতির এ উইকেটে নেমেই শট খেলা সহজ নয় মোটেও। নিগারও স্পিনারদের রাখেন শেষের জন্য। ফাহিমার পর নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খানের ঘূর্ণিতে শেষ ২৩ বলে ভারত তুলতে পারে মাত্র ১১ রান, হারায় ৬ উইকেট। ২০১৬ সালের পর এই প্রথমবার টানা ২ ম্যাচে ২০ ওভার খেলেও এত কম রানে আটকে গেল ভারত (৯৫/৮ ও ১০২/৯)।
রাবেয়া বোলিং শেষ করেন ৪ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে। সুলতানা ২ উইকেট নেন ১৭ রানে। সূত্র: প্রথম আলো
প্রি/রা/আ