বুধবার | ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে লক্ষ্য নিয়ে অভিনয়ে এসেছি তার শতগুণ বেশি পেয়েছি শিহাব আহমেদ

প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ ফারহান আহমেদ জোভান জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা। ঈদে রোমান্টিক ও কমেডি ছাড়াও গল্পনির্ভর বেশ কিছু কাজে দেখা গেছে তাঁকে। ঈদের ব্যস্ততা শেষে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন থাইল্যান্ডে। নতুন নাটক, থাইল্যান্ড সফর ও সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে জোভানের সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ।

ফারহান আহমেদ জোভানফারহান আহমেদ জোভান
ঈদের নাটক নিয়ে কেমন সাড়া পেলেন?
গত ঈদের মতো এবারও আমার অভিনীত নাটকগুলো নিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছি। এখনো আমার সব নাটক প্রচার হয়নি। যে কটি প্রচার হয়েছে তা নিয়ে দর্শকের আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি।

এবার রোমান্টিক ও কমেডি ঘরানার নাটকের পাশাপাশি ‘কবর’, ‘প্রবাসীর কান্না’, ‘ঠিকানাহীন’-এর মতো সিরিয়াস গল্পের বেশ কিছু নাটকে দেখা গেছে আপনাকে। এটা কি নতুন পরিকল্পনা?
চেষ্টা করছি রোমান্টিক নাটকের পাশাপাশি গল্পভিত্তিক নাটকেও কাজ করার। ‘কবর’, ‘প্রবাসীর কান্না’, ‘ঠিকানাহীন’ নাটকগুলো সেই চেষ্টার প্রয়াস। আসলে এ জনরার কাজগুলো আমার খুব পছন্দের। নিজেকে ভেঙে নতুন কিছু করা যায়। ভালো লাগার বিষয় হলো, দর্শকও নাটকগুলো পছন্দ করেছেন।

নাটকের চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলতে খুব বেশি সময় পাওয়া যায় না। তবে আপনার অভিনীত নাটকগুলো দেখে মনে হয়েছে অনেক প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করেছেন। আসলেই কি তাই?
অনেকেই আমাকে বলেছেন, নাটকগুলো দেখে মনে হয়েছে শুটিংয়ের আগে অনেক প্রস্তুতি নিয়েছি। আসলে অতটা সময় পাইনি প্রস্তুতি নেওয়ার। তবে চেষ্টা করেছি মন ডুবিয়ে কাজ করার। নাটকগুলো দুই দিন অথবা তিন দিনে শেষ করেছি। চরিত্রটা বুঝে শুনে ফিল করার চেষ্টা করেছি বলেই হয়তো মনে হয়েছে প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছি।

সময় পেলে আরও ভালো করতে পারতেন বলে মনে হয়?
শিল্পীরা কখনোই নিজের কাজ নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারে না। হ্যাঁ, সময় একটু বেশি পেলে আরও ভালো করতে পারতাম। এই আফসোসটা তো থাকবেই। তবে যতটুকু সময় পেয়েছি মন দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি।

আগে ঈদের নাটক নিয়ে অনেক আলোচনা হতো। এখন শুধু ভিউয়ের মধ্যেই আটকে গেছে। কেন এমন হচ্ছে বলে মনে হয়?
এটা অস্বীকার করা যাবে না, এবার ঈদের নাটক নিয়ে আলোচনা একটু কম। নাটকের প্রতি দর্শকের হয়তো মন সরে গেছে। তবে একদম সরে গেছে বিষয়টি এমন নয়। আমার মনে হয় এ বছর সিনেমার কারণে নাটক কিছুটা ঢাকা পড়ে গেছে। এবার ঈদে ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেগুলো নিয়ে দর্শকের মাতামাতি অনেক বেশি। এটাও কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো দিক। আর ভিউয়ের ব্যাপারটি একেবারেই আলাদা। এটি শুধুমাত্র সংখ্যা।

ইদানীং অনেক অভিনয়শিল্পীকে দেখা যায় নির্দিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গেই অভিনয় করছেন। এ বিষয়ে আপনার কী মন্তব্য?
অনেকেই করছেন। সেটা হয়তো তাঁদের কমফোর্ট জোন। এটাকে আমি নেগেটিভ বলব না। আমি চেষ্টা করি সবার সঙ্গে কাজ করার। নতুনদের সঙ্গে কাজ করতেও ভালো লাগে। এতে করে নতুনরা সুযোগ পায়। গত রোজার ঈদে ‘লাভ সেমিষ্টার’ নামের একটি নাটকে নিহার সঙ্গে কাজ করেছি। নাটকে এটা তাঁর প্রথম কাজ ছিল। নাটকটি কিন্তু দর্শক পছন্দ করেছেন, নিহাকেও পছন্দ করেছেন। সম্প্রতি নাটকটি ১ কোটি ভিউ পূর্ণ করেছে। একজন নতুন অভিনেত্রীকে নিয়ে করা একটি কাজ এত দর্শক পছন্দ করেছেন! এটা কিন্তু ইউনিটের সবার সার্থকতা।

আপনাকে ওটিটি এবং সিনেমায়ও দেখা গেছে। কিন্তু সেখানে নিয়মিত নন আপনি। কেন?
ইচ্ছা করে নিয়মিত কাজ করছি না, ব্যাপারটি এমন নয়। এই দুই মাধ্যমে ভালো কাজের অফার আমার কাছে আসছে না, তাই নিয়মিত দেখা যায় না। ভালো কাজের প্রস্তাব আসলে আবারও ওটিটি ও সিনেমায় দেখা যাবে।

কোনো কাজ চূড়ান্ত করার আগে কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেন?
যেকোনো কাজ চূড়ান্ত করার আগে প্রথমে দেখি কে নির্মাণ করছেন। পরিচালক যদি বিচক্ষণ হন তাহলে কাজটি করে আরাম পাওয়া যায়।

ওটিটি আসার পর অনেকেই নাটকে কাজ করতে চাইছেন না। এ কারণে নাটকে শিল্পীসংকট দেখা দিয়েছে। আপনি কি একমত?
না, এ বিষয়ে আমি একেবারেই একমত নই। ওটিটি আসার পর গুটি কয়েকজন হয়তো নাটকে কাজ করছেন না। তাই বলে সবাই যে নাটকে কাজ করার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন এমন নয়। হাতে গোনা তিন-চারজন ছাড়া বাকিরা নাটকে কাজ করছেন। আমি নাটকে কোনো শিল্পীসংকট দেখছি না।

শোবিজের বন্ধুরা মিলে থাইল্যান্ড ঘুরে এলেন। শিল্পীদের মধ্যে এমন বন্ধুত্ব কম দেখা যায়। আপনাদের এই সম্পর্ক ধরে রাখার রহস্য কী?
সিয়াম, সাফা কবীর, তৌসিফ, শবনম ফারিয়া, টয়া, শাওনসহ আমাদের একটা ফ্রেন্ড সার্কেল আছে। ২০১৩ সাল থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব। আমাদের এই বন্ধুত্বটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। প্রায় ১০ বছর হয়ে গেল আমাদের বন্ধুত্বের। এখনো আমাদের মাঝে বন্ডিংটা আগের মতোই আছে।

কেন গিয়েছিলেন থাইল্যান্ডে? কোনো শুটিং নাকি বেড়াতে?
সবাই মিলে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম। ঈদের আগে সবারই অনেক ব্যস্ততা গিয়েছে। একটু রিলাক্স হতেই এই সফর। আমাদের মধ্যে যাদের পরিবার আছে তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গেছে।

কেমন সময় কাটালেন থাইল্যান্ডে?
দুর্দান্ত সময় কেটেছে। এই সফরটা আমাদের সারা জীবন মনে থাকবে। সবাই মিলে অনেক মজা করেছি।

অভিনয়ে এসেছেন ১০ বছর হয়ে গেল। যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলেন সেটা কি পূরণ হয়েছে বা পূরণ হওয়ার পথে আছে বলে মনে হয়?
দেখতে দেখতে ১০টা বছর চলে গেল, যা পেয়েছি তাতে আমি ধন্য। সৃষ্টিকর্তা, আমার পরিবার ও দর্শকের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। তাঁরা আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন বলেই এগিয়ে যেতে পারছি। তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব হতো না। আমার মনে হয়, যে লক্ষ্য নিয়ে অভিনয়ে এসেছি তার শতগুণ বেশি পেয়েছি। সূত্রঃ আজকের পত্রিকা।
প্রি/রা/মি

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.