মঙ্গলবার | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারাগারে ১০ মাস ধরে বন্দি জবি শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা

প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) মামলায় ১০ মাসের বেশি সময় ধরে কারাগারে আটক আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা।

উচ্চ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে চার মাসের জন্য জামিন শুনানি স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দীর্ঘদিন আটক থাকায় তার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা করছে পরিবার।

অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরার এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ।

মামলায় অভিযোগে বলা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধে বৈরিতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।

খাদিজার জাতীয় পরিচয়পত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নথিতে বয়স ১৭ বছর। তবে তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে ২০২০ সালের ১১ ও ১৯ অক্টোবর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পুলিশ মামলা দুটি করে। এর দুই বছর পর মামলার অভিযোগপত্র তৈরি হলে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেফতার করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। দুবার আদালতে খাদিজার জামিনের আবেদন করলেও তা নামঞ্জুর করা হয়। ১৬ ফেব্র“য়ারি হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি তা স্থগিত করেন। এরপর গত ১০ জুলাই এই দুই মামলায় তার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতুবি করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গ্রেফতারের পর থেকে খাদিজা কাশিমপুর মহিলা কারাগারেই আছেন।

খাদিজার বোন মুনিরা বলেন, গ্রেফতারের আগে আমরা জানতামই না তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। খাদিজা কিডনি রোগে আক্রান্ত। দিনদিন এ রোগ আরও জটিল হচ্ছে। তিনি বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছেন। তিনি আরও বলেন, এ মামলার খরচ চালাতে গিয়ে আমাদের পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে। তিনি জানান, খাদিজাকে কিছুদিন কনডেমড সেলেও রাখা হয়েছিল। তার চিন্তায় আমার মায়ের শারীরিক অবস্থাও খুব খারাপ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মেসবাহ-উল-আজম সওদাগর বলেন, খাদিজা দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা দিয়েছে। যেহেতু আগস্টে গ্রেফতার হয়েছে, তাই দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে পারেনি। সেমিস্টার বাদ গেলে ইমপ্র“ভের সুযোগ থাকে না, তাই একবছর বাদ যায়। এ বছরও তার এক সেমিস্টার বাদ গেছে। সব মিলিয়ে তার পড়াশোনা দুই বছর পিছিয়ে গেছে।

খাদিজার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, খাদিজার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। তাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়াটাই অযৌক্তিক।

এদিকে খাদিজাকে মাসের পর মাস জামিন না দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। এর আগে গত ১২ এপ্রিল খাদিজার মুক্তির দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। সূত্রঃ যুগান্তর।

প্রি/রা/শা

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.