নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী সোমবার (১৭ জুলাই ২৩) বাঘা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মাঠে লড়ছেন, সাবেক দুই জনপ্রতিনিধি। এদের একজন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আ.লীগের সভাপতি ফাতেমা খাতুন লতা (কলস), অপরজন বাঘা পৌর সভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (৭,৮,৯) সাবেক নারি কাউন্সিলর রিনা খাতুন (ফুটবল)।
জানা যায়, ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ফাতেমা খাতুন লতা। পরের দুটি(২০১৪-২০১৯) নির্বাচনে ওই পদে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। রিনা খাতুন, পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (৭,৮,৯) সাবেক নারি কাউন্সিলর। ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত বাঘা পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালে ২৯ ডিসেম্বর পৌরসভার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সংরক্ষিত একই ওয়ার্ডের নারি কাউন্সিলর পদে ভোটে অংশ নিয়ে তিনিও পরাজিত হন।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, এ বছরের ৮ এপ্রিল মারা যান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া আজিজ সরকার। তার মৃত্যুতে শুন্য পদে উপ নির্বাচনের তফশিল ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন। ২০১৯ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন রিজিয়া আজিজ সরকার।
এদিকে দলীয় পদধারি ফাতেমা খাতুন লতাকে জেতাতে ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে সভা সমাবেশ করছেন দলীয় নের্তৃবৃন্দ। আর স্ত্রীর হয়ে একাই লড়ে যাচ্ছেন রিনা খাতুনের প্রতিবন্ধী স্বামী লায়েব উদ্দীন। যোগ্যতা প্রমান করতে প্রার্থীরা নিজেও ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
ভোটারদের ভাষ্যমতে,দলীয় লবিং গ্রুপিং এর কারণে ফলাফল কোন দিকে যাবে,তা নির্ধারন করতে পারছেন না। কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েও বিগত দুটি নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন ফাতেমা খাতুন লতা। নিরুত্তাপ ভোটের মাঠে রিনা খাতুনকে দুর্বল প্রার্থী মনে করলেও ফাতেমা খাতুন লতার জয়ের ব্যাপারে শঙ্কা একটাই, তা হচ্ছে দলীয় লবিং গ্রুপিং। তবে জয়ের ব্যাপারে দু’জনেই চরম আশাবাদি ।
ফাতেমা খাতুন লতা বলেন,বিগত নির্বাচনে পরাজিত হলেও সাধারন ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এতে ভোটাররা দিয়ে জয়যুক্ত করবেন বলে আমি আশাবাদি।
রিনা খাতুন বলেন, তার পক্ষে ভোটারদের সাড়া পেয়ে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পেরেছি। আমি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে সুষ্ঠ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করছি।
আওয়ামীলীগ সমর্থন করেন এমন একজন ভোটার নজরুল ইসলাম বলেন, দু’জনই আওয়ামীলীগ পরিবারের। তিনি বলেন,ফাতেমা খাতুন লতা যোগ্য হলেও রাজনীতির মারপ্যাচ আছে। তার ভাষ্যমতে,আ’লীগের পদবঞ্চিত নেতা কর্মীরা পদধারিদের বিপক্ষে কাজ করছেন। সেক্ষেত্রে রিনা খাতুনের প্রতিবন্ধী স্বামীর মুখের দিক চেয়ে ভোটের চিত্র পাল্টেও যেতে পারে বলে তার ধারনা ।
উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল বলেন,ভোটের তেমন উত্তাপ নেই। উপস্থিতি কম হবে বলে ধারনা পাওয়া যাচ্ছে। তবে পদধারি হিসেবে ফাতেমা খাতুন লতার পক্ষে নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন। দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বাঘা উপজেলা। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৬৩৭। এর মধ্যে পুরুষ ৮১ হাজার ৩৬২ এবং নারি ৮১ হাজার ২৭৫ জন। ২০১৯ সালে ভোটার সংখ্যা ছিল-১লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৩। পুরুষ-৭২ হাজার ৫৯০, নারি-৭১ হাজার ৯৮৩ জন। সেই হিসেবে উপ নির্বাচনে ভোটার বেড়েছে ১৮ হাজার ৬৪ জন। নারি ভোটার বেড়েছে ৯ হাজার ২৮২ এবং পুরুষ ভোটার বেছেছে ৮ হাজার৭৭২ টি।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার ফাতেমা খাতুন বলেন, আগামী ১৭ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার ৫৯টি কেন্দ্রে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার শাহিনুর ইসলাম প্রামানিক বলেন,ভোটাররা যাতে সুষ্ট সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পারেন,সেজন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রি/রা/আ