নির্বাচন কমিশনার সেজে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের এক কাউন্সিলর পার্থী’র সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে প্রতারকচক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃত আসামি’র নাম মো: গিয়াস উদ্দিন। সে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার পুটিবিলা গ্রামের কবির আহাম্মদের ছেলে।
এ নিয়ে আজ দুপুরে আরএমপি সদর দপ্তর কনফারেন্স রুমে পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আরমান আলীকে গত ৮ জুন প্রতারক গিয়াস উদ্দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব:) মো: আহসান হাবিব খানের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন সংক্রান্তে নানান কথাবার্তা বলেন। এর পর ওই প্রতারক আবার সকাল ৮ টা ২৫ মিনিটে আরমান আলীকে মোবাইলে ফোন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়ালের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। প্রতারক ওই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর নিকট টাকা দাবী করেন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ না করলে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ফলাফল তাঁর বিরুদ্ধে যাবে বলে হুমকি প্রদান করে। পরে প্রতারক ওইদিন আবার কাউন্সিলর পদপার্থী মো: আরমান আলী’র মোবাইলে ফোন করে। তখন আরমান আলী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতারকের ফোন রিসিভ করেন না।
কাউন্সিলর পদপার্থী মো: আরমান আলী ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার, রাজশাহী মো: গোলাম মোস্তফা’র এমন অভিযোগে পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার দিনই এ সংক্রান্তে বোয়ালিয়া মডেল থানায় দুইটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নির্বাচন কমিশনার সেজে প্রতারণার এ ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান এর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) বিজয় বসাকের নেতৃত্বে এবং আরএমপি’র সাইবার ক্রাইমের সহযোগিতায় ডিবি’র একটি টিম সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রকে গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান শুরু করেন। এ দিকে পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে প্রতারক মো: গিয়াস উদ্দিন একের পর এক তার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে।
অবশেষে আরএমপি’র ডিবি পুলিশের ওই টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার শেখের টেক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধচক্রের মূল হোতা আসামি মো: গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেফতার করে গত ১৬ই জুন। উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত মো: গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় প্রতারণা-সহ অন্যান্য আইনে ৩টি মামলা রয়েছে।
এ প্রতারণার দায়ে গ্রেফতারকৃত আসামি’র বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি’র সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।