নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারার ইন্ধনে দলের ২০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়। আজ সোমবার রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৯ জুলাই পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া হাটের ইজারাদার সাবেক সেনাসদস্য নাজমুল হক সুমনের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদ দারার নির্দেশনায় সুমনের ওপর হামলার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিয়ে দলেরই ২০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। নাজমুল হক সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম এহিয়া ওই মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ, পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাকিবুর রহমান মিঠুসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়। আহসানুল হক মাসুদ রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসন থেকে দলের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। এ আসনে দলের মনোনয়নে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে এমপি হয়েছিলেন আবদুল ওয়াদুদ দারা।
২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন মনসুর রহমান। আহসানুল হক মাসুদ এবারও মনোনয়ন চান। তবে বর্তমান এমপি মনসুর রহমানের পক্ষের লোক হিসেবেই পরিচিত। দারার সঙ্গে আহসানুল হক মাসুদের সম্পর্ক খারাপ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আহসানুল হক মাসুদের ভাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুল হক বিল্লাল, মনজুরুল হক মিল্লাত ও নিয়ামুল হক জুয়েল। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠুর বাবা হাসান আলী। এদের মধ্যে নিয়ামুল হক জুয়েলও এ মামলার আসামি ছিলেন।
গ্রেপ্তারের পর জামিন নিয়েছেন। মামলাটিতে এখনো দুজন কারাগারে আছেন। বাকিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হাটের ইজারা নিয়ে বিরোধে কে বা কারা ইজারাদার সুমনের ওপর হামলা চালিয়েছেন তা তারা জানেন না।শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এলাকার সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা তাদের আসামি করিয়েছেন।
তারা অভিযোগ করেন, আহত সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম আগে জাসদ এবং জাতীয় পার্টি করেছেন। পরে তাঁকে আওয়ামী লীগের পদ দিয়েছেন দারা। সে জন্য দারার কথামতো চলেন নজরুল। তাই তিনি তাদের মিথ্যা মামলায় আসামি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল হক বিল্লাল বলেন, আহসানুল হক মাসুদ মনোনয়ন চান বলে তাঁকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। যারা সুমনের ওপর হামলা করেছেন আমরাও তাদের শাস্তি চাই। এ জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি। তাহলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুমনের ওপর হামলার পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সামাদ মোল্লার নেতৃত্বে আহসানুল হক মাসুদের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যালয় এবং ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। ১৫ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
এ নিয়ে মামলা করতে গেলে পুলিশ নেয়নি। তাই আদালতে সামাদ মোল্লাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ১০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে দারার অনুসারী সামাদ মোল্লা এই হামলা চালিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘যারা সুমনের ওপর হামলা চালাল, তারাই সংবাদ সম্মেলন করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে! এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর কি হতে পারে?
তিনি আরও বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, আওয়ামী লীগকে বিক্রি করে খায়, তারা আমার বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে।’ তাদের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এদের নামটাও উচ্চারণ করতে চায় না। ঘৃণা লাগে।
প্রি/রা/আ