প্রিয় রাজশাহী ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আল জাজিরার একজন কর্মীর পরিবারের ২২ সদস্য নিহত হয়েছে।
বুধবার সকালে উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আল জাজিরা আরবি সংবাদদাতা মোয়ামেন আল শরাফির পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়।
নিহতদের মধ্যে আল শরাফির বাবা-মা মাহমুদ ও আমিনা, তার ভাইবোন এবং তাদের পত্নী, পাশাপাশি ভাগ্নে ও ভাগ্নিও ছিলেন।
আল শরাফি আল জাজিরাকে বলেন, একটি বিস্ফোরক ব্যারেল বাড়িটিতে আঘাত হানে, যার ফলে মাটিতে গভীর গর্ত তৈরি হয়। সিভিল ডিফেন্স ক্রুদের কেউ তাদের মৃতদেহের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি।’
‘আমাদের প্রিয়জনকে বিদায় জানানো থেকে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং তাদের যথাযথ কবর দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে’-বলেন তিনি।
হামলার পর তোলা একটি ভিডিওতে আল শরাফির এক আত্মীয়কে বোমা বিস্ফোরিত বাড়ির ধ্বংসাবশেষের কাছে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা গেছে।
‘মনে হচ্ছে ভোর ৪ বা ৫টার দিকে তারা বাড়িতে আঘাত করেছে। সূর্য ওঠা পর্যন্ত আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারিনি, বেশ কয়েকজন শিশু নিহত হয়েছে’- ওই আত্মীয় বলেন।
এদিকে আল শরাফি বোমা হামলায় নিহত হওয়ার আগে তার মা আমিনা তাকে যে শেষ বার্তা পাঠিয়েছিলেন তার বিষয়বস্তু শেয়ার করেছেন।
ভয়েস নোটে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আসসালামু আলাইকুম। শুভ সকাল, মমিন। তুমি কেমন আছ? আমি আশা করি তুমি ভালো আছো. তোমার স্ত্রী-সন্তান কেমন আছে? তোমার শারীরিক অবস্থা কি? নিজের যত্ন নিও।’
বার্তা আরও বলা হয়, ‘আল্লাহ তোমাকে এই যুদ্ধ থেকে অক্ষত অবস্থায় বের করে আনুন। ভালোভাবে নিজের যত্ন নিও। আমি সত্যিই তোমাকে মিস করি, আমি প্রতিদিন তোমার জন্য প্রার্থনা করি। আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক।’
একটি বিবৃতিতে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করে বলেছে, এই অপরাধের জন্য দায়ী সবাইকে জবাবদিহি করার জন্য সব আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা গবে।
মিডিয়া নেটওয়ার্ক বলেছে, ভয়াবহ ঘটনাটি বুধবার জাবালিয়া ক্যাম্পে ঘটে, যেখানে মোমিনের পরিবার আশ্রয় চেয়েছিল, যার ফলে তার বাবা, মা, তিন ভাইবোন এবং তার সন্তানদের হত্যা করা হয়।
এতে আল জাজিরা অবিলম্বে এই গণহত্যার অবসান ঘটাতে এবং শহীদদের পরিবার এবং নির্দোষ শিকারদের জন্য দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সংবাদপত্রের স্বাধীন সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
২৫ অক্টোবর ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় আল জাজিরার আরেক আরবি সংবাদদাতা ওয়ায়েল দাহদুহর পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে হত্যা করা হয়।
গাজায় আল জাজিরার ব্যুরোর সম্প্রচার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু আল-কুমসানও ৩১ অক্টোবর জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার বাবা ও দুই বোনসহ পরিবারের ১৯ সদস্যকে হারিয়েছেন।
৭ অক্টোবর থেকে গাজায় কমপক্ষে ১৬ হাজার ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২০০। সূত্র আল জাজিরা।