নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীতে মিশনারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আওয়ার লেডি অফ দি মিশনের সম্পত্তি ক্রয়ে জালিয়াতি নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশ তার প্রতিবাদ করেছেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, জমি কেনাবেচার স্বাক্ষী হওয়ার কারণে আমাকে জড়ানো হয়েছে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন রাজশাহী শাখার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই কথা বলেন। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সম্পন্নভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, যোগসাজসী ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। জমির জালিয়াতি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, মিশনারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আওয়ার লেডি অফ দি মিশনের সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য সম্পত্তির দলিল, খারিজ, খাজনার কাগজ সঠিক আছে কিনা আমি যাচাই করি। ডিঙ্গাডোবা ক্যাথলিক মিশনের ফাদার লিটন কস্তাকে সরবরাহ করি।
তিনি বলেন, সম্পত্তির দাতা আলমগীর কবীর জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতির বিষয়ে দলিল লেখক এসএম আয়নাল হককে দায়িত্ব প্রদান করেন। দলিল লেখক এসএম আয়নাল হক জেলা প্রশাসেেকর কার্যালয় হইতে অনুমতি নিয়ে আওয়ার লেডী অফ দি মিশন (আরএনডিএম) পক্ষে সিস্টার পূরবী চিরানের নামে একটি কবলা দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দেন।
অনুমতিপত্রের জন্য দলিল লেখক এসএম আয়নাল হকের সাথে সম্পত্তির মালিক আলমগীর কবীর এবং ফাদার লিটন কস্তার পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি হয়। আলমগীর কবীর দলিল লেখক এসএম আয়নালকে টাকা দেন। সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয়ের মিডিয়া আক্কাস আলী নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এডিসি রেভিনিউ কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমতিপত্রটি জাল। অভিযোগে পবা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক এসএম আয়নাল হক, সম্পত্তির দাতা আলমগীর কবীর, দলিল গ্রহীতা পক্ষে ফাদার লিটন কস্তা এবং দলিলে শুধুমাত্র সাক্ষী হিসেবে থাকায় আমাকেও জড়িত করা হইয়াছে। আমাকে জড়িত করার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও যোগসাজসী।
আমি অভিযোগ সম্পর্কে জানার পরে দলিল লেখক এসএম আয়নাল হক আমাকে মোবাইল ফোনে জানান ‘তিনি দলিল দাতা আলমগীর কবীরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হাফিজ নামক এক ব্যক্তির মাধ্যমে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করেন।’ আলমগীর কবির চেয়েছিল তার টাকা দরকার যে ভাবেই হোক যতদ্রুত সম্ভব কাজটা করে দেন। যার অডিও রেকর্ডিং আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।
তিনি আরও বলেন, ফাদার লিটন কস্তা সমস্ত অনিয়ম সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে নিজ ইচ্ছায়, নিজ দায়িত্বে দলিল সমূহ সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করেন। যার অডিও রেকর্ডিং আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। জালিয়াতির বিষয়ে অবগত হওয়ার পরে আমি সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিগত গত নভেম্বরের ২৯ তারিখে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করি। যা এখনও তদন্তাধীন অবস্থায় আছে। আমি অনুমতিপত্রের জালিয়াতির বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি জালিয়াতির বিষয়ে কোন ভাবেই জড়িত না এবং আমি সম্পূর্ণ ভাবে নির্দোষ। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, যোগসাজসী ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমার বিরুদ্ধে রাজশাহী থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকে না জেনে শুনে যে প্রতিবেদন করেছে তার নিন্দা জানাচ্ছি।
জালিয়াতির ঘটনায় আমি গত রোববার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত ভাবে আমার জবানবন্দী ও অডিও রেকর্ডিং প্রদান করেছি। এবং জেলা প্রশাসকের কাছে সত্যতা যাচায়ের জন্য যে আবেদন করেছি।
এ বিষয়ে দলিল লেখক এসএম আয়নাল হক বলেন, দলিলের সকল কাজ আইনজীবী নিজেই করেছেন। আমি শুধু দলিল লিখে দিয়েছি। এ নিয়ে তদন্তও হচ্ছে। আমি আমার লিখিত বক্তব্য দিয়ে এসেছি। রিপোর্ট হলে সকল কিছু জানা যাবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য লিটন কস্তাকে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।