মঙ্গলবার | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু- বাংলা ও বাঙালীর এক অবিসংবাদিত নেতা

ভোরের আলো তখনো ফুটেনি। বসন্তের বাতাস বইছে চারিদিক। গাছে গাছে নতুন পাতা জন্মাচ্ছে। চারিপাশ ভরে গেছে ফুলের মো মো গন্ধে। আর এমন একসময় শেখ পরিবার আলোকিত করে আসে নতুন এক সদস্য। চারিদিক আনন্দের জোয়ারে ভেসে যায়। সেই নতুন সদস্যের নাম রাখা হয় ‘খোকা’। কে জানতো, এই খোকাই একদিন হবে নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারি! গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণেই, পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। তার হাত ধরেই আসে বাঙালির স্বাধীনতা, বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধুর জন্মের দু’বছর না যেতেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার বিখ্যাত ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি রচনা করেছিলেন। সেই বিদ্রোহী কবিতার বিখ্যাত ‘শির নেহারি আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির’ পঙক্তিটি যেন পুরোপুরি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী এবং রাজনৈতিক জীবনকেই চরিতার্থ করে।

পৃথিবীর প্রতিটি বস্তু ক্ষণস্থায়ী হলেও সত্য ও সততা অক্ষয়-অবিনশ্বর। বাঙালি জাতির এমনই এক চির অবিনশ্বর কিংবদন্তির নাম শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি মুক্তির কান্ডারি; স্বাধীনতার স্থপতি। তিনি শুধু কোনো ব্যক্তি নন, তিনি বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বাংলাদেশের মহানায়ক । তার দৃঢ় চেতনার জাগরণ শুরু হয় তার কৈশোর ও ছাত্রজীবন থেকেই। ক্রমেই তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির মুক্তির কান্ডারি, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।

২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম এবং একাত্তরের নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেই বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বীর বাঙালি। বাংলার অনেক সূর্য সন্তান হয়তো বাঙালি জাতির শৃঙ্খল মোচনের স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছেন বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন শেখ মুজিবের নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হবে। শেখ মুজিব শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী চেতনা। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও রাজনীতি একটি ভৌগোলিক সীমারেখায় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

তিনি কিশোর বয়সে খ্যাতিমান রাজনৈতিক নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে গোপালগঞ্জে নির্ভীক কণ্ঠে তাদের গ্রামের স্কুলের দাবি তুলে ধরেছিলেন। আঠারো বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় এক ঘটনায় প্রতিবাদী ভূমিকা গ্রহণের জন্য তরুণ শেখ মুজিব গ্রেপ্তার হন। সেসময় সপ্তাহখানেক জেলহাজতে থাকতে হয় তাকে। সেটা ছিল তার জীবনের প্রথম কারাবরণ। এরপর বাঙালি জাতির অধিকার, স্বাধীনতার জন্য অসংখ্যবার কারাবরণ করে এই মহান নেতা। রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তার বাবা তাকে বাধা দেননি। অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে জানা যায়, তার বাবা তাকে বলেছিলেন, বাবা রাজনীতি করো আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবে না।

ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই কিশোর মুজিব কলকাতায় যান। কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তার রাজনৈতিক জীবনের বড় পরিবর্তনগুলো শুরু হয়। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় হন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে শেখ মুজিবও ঢাকায় চলে আসেন। নতুন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালে নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে গড়ে উঠা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৬ এর ঐতিহাসিক ছয় দফাভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তার ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী পরিকল্পিত গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ প্রায় নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করে। জাতির পিতা পাকিস্তানের কারাগারে কাটানোর পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি আসে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু, ফিরে আসেন স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়। বিমানটি তেজগাঁও বিমানবন্দর স্পর্শ করে বিকাল ৩টায়। বিমানের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু জনতার মহাসমুদ্রের উদ্দেশে হাত নাড়েন। তার চোখে তখন স্বজন হারানোর বেদনা-ভারাক্রান্ত অশ্রুর নদী, আর জ্যোতির্ময় দ্যুতি ছড়ানো মুখাবয়ব জুড়ে বিজয়ী বীরের পরিতৃপ্তির হাসি। বিমানের সিঁড়ি বেয়ে জাতির জনক তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনি করে রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি সম্মান জানানো হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুকে মঞ্চের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এয়ারপোর্ট থেকে রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে সেখানে স্থাপিত মঞ্চে প্রায় কুড়ি মিনিটের সেই আবেগঘন বক্তৃতায় তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দিদশায় তিনি ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন, বাঙালিকে কেউ ‘দাবায়ে রাখতে’ পারবে না। ‘যে মাটিকে আমি এত ভালোবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালোবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালোবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারব কি না। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশে নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশে কৃষিবিপ্লব, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতায়ন, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল পরিবর্তন সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে শুধু অঙ্গীকারই করেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদে তা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তিনি স্থায়ী ও দৃঢ় প্রত্যয়নে অঙ্গীকার করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, অর্থাৎ আমাদের এই দেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ। তিনি তার মেধা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তিনি দেখলেন সব সুযোগ-সুবিধা শহরকেন্দ্রিক। তিনি বাংলাদেশের গ্রামগুলোকে আধুনিক ও পরিকল্পিত গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখলেন। কাউকে পেছনে ফেলে না রেখে এগিয়ে যাওয়া এই নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ভাষণে বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে উন্নীত করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর তালিকা তৈরি করেন। তিনি সবার আগে অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দেন। কারণ সেসময় দেশব্যাপী জনগণকে সহায়তা প্রদান ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনঃনির্মাণ খুবই জরুরি ছিল।

জাতির জনক একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে আপোষহীন ছিলেন। তিনি বলেন, আমি আমার অফিসারদের হুঁশিয়ার করছি কেউ যেন ঘুষ না নেয়। এই মাটিতে দুর্নীতিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তার ভাষণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ছিল সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা। তিনি জনগণকে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের অবশ্যই শান্তি বজায় রাখতে হবে। শান্তিপ্রিয় বাঙালি স্বাধীনতার জন্য অনেক রক্ত ঝরিয়েছে। তারা শান্তি রক্ষা করতেও জানে’। বক্তৃতায় তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বললেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে’।

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির ব্যাপারেও জাতির জনক সজাগ ছিলেন। তিনি তার ভাষণে বৈদেশিক নীতির মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা দেন। তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ জাতির জনক অন্তর্ভুক্তিমূলক আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণের দিক নির্দেশনা দেন যেখানে দল-মত নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে। তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হবে’।

সঠিক দিক নির্দেশনা ছাড়া জাতি পুনর্গঠন হলে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ যদি পর্যাপ্ত খাদ্য না পায়, মা-বোনদের যদি কাপড় না জোটে এবং যুব সমাজ যদি কাজ না পায় তাহলে আমাদের এই স্বাধীনতা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’ সশ্রদ্ধ চিত্তে বঙ্গবন্ধু সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছ, তোমরা রক্ত দিয়েছ, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।’

আজকের বাংলাদেশের যে সমৃদ্ধি, উন্নয়নের মহাসোপানে যে অভিযাত্রা তার সূচনা করেছিলেন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। এ দেশের মানুষের কথা তিনি ভাবতেন সব সময়। কীভাবে এ দেশের মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে, উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারবে সেই সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন মাত্র কয়েক বছরেই।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছেন “আমি হিমালয় দেখিনি, আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি তার ব্যক্তিত্ব ও নির্ভীকতা হিমালয়সম।” শেখ মুজিবকে নিয়ে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বলেছেন,”শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের বন্ধু।”

“বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশই শুধু এতিম হয়নি, বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে”- ব্রিটেনের সাবেক এমপি জেমসল্যান্ড।” আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তেজি এবং গতিশীল নেতা আগামী ২০ বছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে পাওয়া যাবে না” -যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ ও কূটনৈতিক হেনরি কিসিঞ্জার।

বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির দূত, স্বাধীনতা ও শান্তির প্রতীক। বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, এই পৃথিবী যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যতদিন থাকবে, তিনি একইভাবে প্রজ্জ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হূদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামী, শান্তিকামী, মানবতাবাদী হূদয়ে। বঙ্গবন্ধু বিবিসিতে ডেভিড ফ্রস্টের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন” My greatest strength is the love for my people. My greatest weakness is that I love them too much. ”

জাতির জনকের দুটি স্বপ্ন ছিল- বাংলাদেশ স্বাধীন করা এবং দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা। আমাদের তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং তার দ্বিতীয় স্বপ্ন পূরণ করছেন তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে এবং বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভ করেছে। বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবে, পথ দেখাবে। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের কালজয়ী এ মহাপুরুষকে চিরকাল স্মরণ করবে।

সম্পাদনায়: নাদিম ইসলাম নিলয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
মতিহার হল ছাত্রলীগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখা ও সহযোগীতায়: তরিকুল ইসলাম শাকিল, হাসিবুল শান্ত, হাসিবুর রহমান হাসিব, জিহাদ হোসেন এবং মাহিম সরকার।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.