শুক্রবার | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঠক শূন্যতায় ধুঁকছে পুঠিয়া সাধারণ পাঠাগার

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়াঃ রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একমাত্র সাধারণ পাঠাগারটি এখন পাঠক শূন্যতায় ধুঁকছে। এক সময় এসব পাঠাগারে চেয়ার ফাঁকা হওয়ার অপেক্ষায় থাকতো পাঠকরা। এখন চেয়ারগুলো পাঠকের আশায় থাকে। বই পড়ার টেবিলগুলোও নষ্ট, কোথাও বা উপরের সিলিং ভেঙে পড়ার উপক্রম, নতুন করে কোন বইও পাঠাগার যোগ হয়নি।

উপজেলার সব স্থানে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও উপজেলা সাধারণ পাঠাগার এখন পর্যন্ত কোন কিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়াপ লাগেনি। এর কারণে ও পাঠক সংখ্যা কমতে পারে বলে মনে করে অনেকেই।

সাধারণ পাঠকদের অভিযোগ সর্বত্র প্রতিনিয়ত পরির্বতনে ছোঁয়া লাগলেও এই পাঠাগারটি অযত্ন-অবহেলায় ক্রমেই জরাজীর্ণ হয়ে পরেছে।

তারা দাবি করছেন, আধুনিক মানের প্রযুক্তিযুক্ত পাঠাগার গড়ে তুলতে পারলে এখানে আবারও পুরোনোদের পাশাপাশি অনেক তরুণ প্রজন্মের পাঠকও আসবেন।

উপজেলা পরিষদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ মানুষের মাঝে বিভিন্ন বই পড়ার আগ্রহ থাকায় পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে সরকারি বাসভবনের সাথে ছোট ছোট চার কক্ষে নব্বই দর্শকে সাধারণ পাঠাগারটি চালু করা হয়। পত্র-পত্রিকার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকার উন্নতমানের বই পাঠকদের পড়ার জন্য রাখা হয়। পাঠকরা যেন এসে নিয়মিত পড়াশোনা করতে পারেন। সেই জন্য প্রতিদিন বিকেলে চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে। পাঠাগার দেখাশোনার জন্য সব সময় একজন ইনচার্জ রাখা হয়েছে।

বর্তমানে নিয়মিত পাঠক মনিরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ পাঠাগারে দিনদিন সাধারণ মানুষের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ অনেক কমে যাচ্ছে। হাতের নাগালে তথ্য প্রযুক্তির সুবাদে বর্তমান প্রজন্মের যুবকদের মাঝে পাঠাগারে যাতায়াতের কোনো আগ্রহ নেই। যার কারণে এক সময়কার পাঠক পরিপূর্ণ পাঠাগারটি দিনে দিনে পাঠক শূন্য হয়ে যাচ্ছে।

পাঠাগারটিতে এক সময় দৈনিক পত্র-পত্রিকার পাঠকই ছিলেন প্রায় অর্ধশতাধিক। এছাড়া বিভিন্ন বই পড়ার জন্যও অনেক পাঠক এখানে ভীড় জমাতো। সব সময় পাঠকে পরিপূর্ণ থাকতো সাধারণ পাঠাগার। দিনদিন পাঠকের সাথে পাল্লা দিয়ে পাঠাগার থেকে বিভিন্ন মূল্যেমান বই গুলোও হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বইয়ের পাশাপাশি আধুনিক মানের প্রযুক্তি নির্ভর পাঠাগারটি গড়ে তোলা হলে এখানে আবারো পাঠক সংখ্যা বাড়বে।

উপজেলা সাধারণ পাঠাগারের ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর আগে স্থানীয়দের পাশাপাশি দুর-দুরান্ত থেকে অনেক পাঠক এখানে আসলেও বর্তমানে তা অনেক কমে গেছে। প্রতিদিন যথা সময়ে পাঠাগার খোলা থাকলেও এখন হাতে গোনা মাত্র দু’তিনজন পাঠক নিয়মিত আসেন।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, উপজেলা সাধারণ পাঠাগারে আমি অনেকবার গিয়েছি। বইগুলো পুরানো এবং আসবাবপত্রগুলো নষ্ট হয়েছে এটা সত্য। তবে সাধারণ পাঠাগার ভিতরে হওয়ার কারণে বইপ্রেম মানুষের কাছে পরিচিতিটা অনেক কম। তবে উপজেলা সাধারণ পাঠাগারটিকে বড় পরিসরে করার ব্যবস্থা নিচ্ছি। তারপরে নতুন বই ক্রয় ও আসবাবপত্র গুলো আধুনিকায়ন করা হবে। তবে এটাকে আধুনিক মানের পাঠাগার হিসাবে গড়ে তোলা পরিকল্পনায় আমার রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.