বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল নিয়ে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাদের ঠেকাতে রিভিউ (পর্যালোচনা) ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করল ইউজিসি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ইউজিসি সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
সোমবার (২৬ জুন) ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে আর্থিক বিষয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন এবং আর্থিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ইউজিসি কর্তৃক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য ‘অভিন্ন আর্থিক ও হিসাব ম্যানুয়াল’ প্রস্তুত করা হয়। যা কমিশনের ১৬৪তম সভায় বাস্তবায়নের জন্য সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। উক্ত নীতিমালাটি পর্যালোচনা করে মতামত/সুপারিশ পেশ করার জন্য কমিটি গঠন করা হলো।
ইউজিসি সূত্র জানায়, কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সেলিয়া শাহনাজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
এর আগে গত ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। বিবৃতিতে আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে এটি বাতিল করা না হলে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে প্রস্তাবিত এ নীতিমালাকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে সরকার ও শিক্ষকদের পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানে দাঁড় করানোর অপতৎপরতা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
গত ১৯ মে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ জানিয়েছিলেন, অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা এবং হিসাব ম্যানুয়াল আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত ও অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করতে অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা এবং হিসাব ম্যানুয়াল প্রণয়ন করা হয়েছে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।’
জানা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অনিয়ম ঠেকাতে নীতিমালা করতে ইউজিসি ২০১৯ সালে কমিটি করেছিল। সম্প্রতি নীতিমালাটি অনুমোদন দেওয়া হয়। নীতিমালায় মূলত জাতীয় পে-স্কেলের আওতাধীন ব্যয় বাদে সম্মানী, ভাতা ও পারিতোষিকের হার প্রস্তাব করা হয়েছে।