রাজশাহীতে চামড়া কেনার মানুষ পাচ্ছেন না মুসল্লিরা। কোরবানির পর অনেকের বাড়িতেই পড়ে আছে চামড়া, কিন্তু কিনতে যায়নি কেউ। আবার কোনো এলাকায় কেত্রা গেলেও দাম একেবারেই কম। খাশির চামড়া তো কেনার লোকই পাওয়া যাচ্ছে না। ১০-২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে ছাগলের চামড়া।
অনেকেই বিক্রি না করে মাটিতে পুঁতে রেখে দিয়েছেন ছাগলের চামড়া। গরুর চামড়া কিনতে কিছু এলাকায় সকালে ক্রেতারা ঘুরলেও বেলা বাড়ার পর আর তেমন দেখা মেলেনি তাদের। বেলা ১২টা পর্যন্ত যে গরুর চামড়া ৮০০ টাকা দাম বলেন ক্রেতারা, দুপুর একটার পরে তার দাম নেমে যায় ৩০০ টাকায়।
ফড়িয়া ও মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চামড়া কিনে মূল বাজারে তা বিক্রি করতে পারবেন কি না, সেই শঙ্কা রয়েছে। গত বছর যে দামে তারা মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া কেনেন তার অর্ধেক দামে আড়তে বিক্রি করত হয়। সেই লোকসানের আশঙ্কাতেই এবার মাঠে নেই তারা।
দুপুরের দিক থেকেই ‘রাজশাহী নগরীতে চামড়া বিক্রি করতে আসেন অনেক মুসল্লি। ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা তাদের লোকজন নিয়ে চামড়া কিনতেও বসেন। গ্রামাঞ্চল থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা সেসব দোকানে চামড়া বিক্রি করতে আসেন। কিন্তু এবার পাইকারী ক্রেতারা তেমন কোনো চামড়া কিনেনি।
যে দুই-চারজন বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান ও ভটভটিযোগে চামড়া আনছেন তাদের সেই পরিবহন আটকে আড়তদারের লোকজন এতটাই কম দাম বলছেন যে আসল টাকাই উঠবে না ফড়িয়া ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। খাসি বা ছাগলের চামড়া তো কিনতেই চাচ্ছেন না। অনেকেই গরুর চামড়ার সঙ্গে ফ্রি দিয়ে দিচ্ছেন। বা ১০-২০ টাকা হারে দাম ধরে নিচ্ছেন ক্রেতারা। গ্রামে ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে না পেরে কেউ কেউ মাটিতে পুঁতে রেখেছেন।
শহরে চামড়া বিক্রি করতে এসে ক্রেতা না পেয়ে বসেছিলেন মাজদার হোসেন নামের এক ফড়িয়া ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, গ্রাম থেকে গরুর আর ছাগলের চামড়া কিনে এনেছি। এখন বিক্রি করার লোক পাচ্ছি না। দুর্গাপুরের বর্ধনুপরের আলী আসগর বলেন, দুপুর দুইটা পর্যন্ত ছাগলের চামড়ার কেউ দাম বলেনি। বাধ্য হয়ে চামড়া মাটিতে পুঁতে রেখেছি। আমার মতো অনেকেই ছাগলের চামড়া মাটিতে পুঁতে রেখেছেন।
পলাশবাড়ি গ্রামের আনসার আলী বলেন, আমাদের এলাকায় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০-৮০০ টাকা দামে। সবচেয়ে বড় গরুর চামড়া ৮০০ টাকা। আর ছোট গরুর চামড়া ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।