ঈদুল আজহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো পশু কোরবানি। তবে পশু কোরবানির পর পরিচ্ছন্নতার নিয়মগুলো ঠিকঠাক পালন করা না হলে পশুর রক্ত ও উচ্ছিষ্ট থেকে পরিবেশদূষণের আশঙ্কা থাকে। বেড়ে যায় রোগবালাই সংক্রমণের ঝুঁকি। এ জন্য পশু কোরবানির পর আমাদের সবার সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া উচিত।
সঠিকভাবে বর্জ্য পরিষ্কার না করা হলে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
বর্জ্য অপসারণ করা না হলে ওখান থেকে নানা ধরনের ক্ষতিকর কীট, মশা, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের জন্ম হতে পারে। যা থেকে দেখা দিতে পারে নানা রকম রোগবালাই।
কোরবানির পর রক্ত, নোংরা পানি কোথাও জমে থাকলে সেখানে জন্ম নিতে পারে এডিস মশা, যা থেকে হতে পারে ডেঙ্গুর সংক্রমণ।
অতিরিক্ত বর্জ্যের চাপে নর্দমা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
কোরবানির পশুর বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেললে তা পচে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় করণীয়
কোরবানির আগেই নিকটবর্তী মাঠ কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় একটা গর্ত করে রাখা উচিত। কোরবানির পর মাংস কাটার সময় উচ্ছিষ্টাংশ একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন। পরে সেগুলো গর্তে পুঁতে ফেলুন। ভুঁড়ি পরিষ্কারের পর আবর্জনাও গর্তে পুঁতে ফেলুন। গর্তের মধ্যে কিছু ব্লিচিং পাউডার বা জীবাণুনাশক পদার্থ দিয়ে দিতে হবে।
যে স্থানে মাংস কাটা হবে, অবশ্যই সেখানে পলিথিন বিছিয়ে নিন। তার ওপরে মাংস কাটা ও ভাগ করা হয়ে গেলে বিছানো শিট বা পাটি উঠিয়ে নিয়ে ওই জায়গা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।
কার্যক্রমের শেষে রক্তমাখা রাস্তাঘাট, স্যাভলন মেশানো পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন কোনোভাবে জমে না থাকে।
স্যানিটাইজার দিয়ে চারপাশ পরিষ্কার করে নিন
স্যানিটাইজার দিয়ে চারপাশ পরিষ্কার করে নিনছবি: পেক্সেলস
বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার রাখতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহারে সতর্কতার প্রয়োজন। ব্যবহারের সময় গ্লাভস ব্যবহার করুন। যেন চোখে না যায়।
শহরের ফ্ল্যাট বাড়িতে বসবাসরত কয়েকজন মিলে বাড়ির এক স্থানে কোরবানি করা হলে সবচেয়ে ভালো হয়। সে ক্ষেত্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাজ করতে সুবিধা হয়।
কোরবানি জন্য খোলামেলা জায়গা এবং রাস্তার কাছে জায়গা নির্ধারণ করা শ্রেয়। সে ক্ষেত্রে বর্জ্য নিরসনে সিটি করপোরেশনের গাড়ি এসে সাহায্য করতে সহজ হবে।
উচ্ছিষ্টাংশ, বর্জ্য পলিথিনের ব্যাগে ভরে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশুর চামড়া বিক্রি কিংবা দান করতে হবে। না হলে গন্ধ ছড়াবে।
বাড়ির আশপাশে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি বাড়ির ভেতরের কথাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। মাংস ঘরে আনার পর কাটা ও বাছাইয়ের জন্য অনেকেই ঘরের ভেতরের রুম ব্যবহার করেন। পরিষ্কার প্লাস্টিক বিছিয়ে নেবেন। মাংস বণ্টনের পর ভালোভাবে স্যাভলন বা ডিটারজেন্ট দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
বর্জ্য পরিষ্কারের পরে আপনার হাত, পা ও সারা শরীর সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে গোসল করে নিতে হবে।